সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনাময় খাত

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২২

সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনাময় খাত

অনলাইন ডেস্ক : বিডা’র কনফারেন্স রুমে Blue Economy: Prospective Economic Engagement in Bangladesh বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন এবং সেমিনারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলম কি-নোট উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে কি-নোট উপস্থাপনকালে খুরশেদ আলম বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আয়তন মোট ৬৬৪ কিলোমিটার, কিন্তু মাছ আহরণ করা হয় মাত্র ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে। ২০১২ সালে সাগরের সীমানায় মালিকানা প্রতিষ্ঠা হলেও, এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে তেল ও গ্যাসসহ সামুদ্রিক সম্পদগুলো। এ ব্যাপারে বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হলেও, তা আলোর মুখ দেখেনি। অথচ বাংলাদেশের সমুদ্র ব্লকের পাশেই মিয়ানমার আরও আগেই খনিজ সম্পদ উত্তোলন শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু মাছ কিংবা খনিজ সম্পদ নয়, নিজেদের সীমানার সাগরকে ব্যবহার করে পাল্টে দেওয়া যেতে পারে বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতির চিত্র। সমুদ্র অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন, জাহাজ শিল্প, গভীর সাগরে মাছ ধরার উপযোগী জাহাজ নির্মাণ, কনটেইনার, ওষুধ, প্রসাধনীসহ নানা শিল্প বিকশিত হতে পারে।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের যে সমুদ্রসীমা আছে তা মূল ভূখণ্ডের ৮১ ভাগের সমান। পুরো বিশ্বে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে দেড় লাখ জাহাজ চলাচল করে, সেখানে বাংলাদেশের জাহাজ মাত্র ৭০টি। অথচ এই পথে পণ্য পরিবহনের অর্থনীতির আকার ৯শ কোটি ডলার। এছাড়াও কনটেইনার নির্মাণেও বাংলাদেশের সম্ভাবনা রয়েছে। ৭৪ শতাংশ কনটেইনার ব্যবহার হয় এশিয়া অঞ্চলে। প্রতি বছর ১৫ শতাংশ হারে বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কনটেইনারের চাহিদা আরো বাড়বে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সমুদ্র বন্দর থাকলেও, তা মাদার ভেসেলের জন্য উপযোগী নয়। এমন অবস্থায় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হলে তা সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।

এসময় এমসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সরকারি নীতি নির্ধারকদের নীতি তৈরির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করতে বলেন। তিনি মৎস্য আহরণ, জাহাজ শিল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, সুনীল অর্থনীতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনাময় খাত। প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে পারলেই এ খাত থেকে আগামী কয়েক বছরেই বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব। এসময়ে তিনি নীতিগুলো যথাযথভাবে প্রস্তুত ও বিদ্যমান নীতিগুলো দ্রুত সংস্কার করে সহজ বিনিয়োগ বান্ধব নীতি তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে পরামর্শ দেন। এসময় তিনি সুনীল অর্থনীতির খাত ভিত্তিক আলোচনা করেন এবং প্রতিটি খাতকে গুরুত্বসহ তুলে ধরার কথা বলেন।

সেমিনারে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, মৎস্য, তেল ও জ্বালানি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ ও মতামত প্রদান করেন।