প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২৫
মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোগান। ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোগান মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে গাজার মানবিক সংকট নিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) পাঠানো চিঠিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি মেলানিয়া যে সহানুভূতি দেখিয়েছেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতির প্রতিও একই সহানুভূতি দেখানোর আহ্বান জানানো হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনকে মেলানিয়ার পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠির কথা উল্লেখ করে এমিন বলেন, আপনার চিঠিতে যেমনটি আপনি বলেছেন, প্রতিটি শিশুরই একটি প্রেমময় এবং নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠার সর্বজনীন ও অনস্বীকার্য অধিকার রয়েছে। এই অধিকার কেবল কোনো অঞ্চল, জাতি, ধর্ম বা আদর্শের জন্য নয়। এই অধিকার থেকে বঞ্চিত নিপীড়িতদের সমর্থন করা মানব পরিবারের প্রতি একটি মৌলিক দায়িত্ব।
‘এই প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে একজন নেতার স্ত্রী হিসেবে, ইউক্রেন যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাবে প্রাণ হারানো, বিচ্ছিন্ন পরিবার এবং এতিম শিশুদের প্রতি আপনার সমবেদনা এমন একটি উদ্যোগ, যা হৃদয়ে আশা জাগিয়ে তোলে।’
চিঠিতে বলা হয়, আমি বিশ্বাস করি আপনি গাজার জন্য আরও জোরালোভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করবেন, যা আপনি যুদ্ধে প্রাণ হারানো ৬৪৮ জন ইউক্রেনীয় শিশুর প্রতি দেখিয়েছেন। গাজায় দুই বছরের মধ্যে ১৮ হাজার শিশুসহ ৬২ হাজার নিরীহ বেসামরিক নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গাজায় নজিরবিহীন সহিংসতার কথা তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, আমাদের কি কখনো মনে হয়, একদিন ‘অজানা সৈনিক’ শব্দটি, যা একসময় নিহত সৈনিকদের জন্য ব্যবহৃত হত – এখন শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে? আজ, হাজার হাজার গাজা শিশুর কাফনের ওপর লেখা ‘অজানা শিশু’ শব্দগুলো। তাদের নামও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এগুলো আমাদের বিবেকের ওপর অপূরণীয় ক্ষত রেখে যাচ্ছে।
এমিন আরও বলেন, এই শিশুদের গভীর মানসিক ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে এবং তারা হাসতে ভুলে গেছে। মাইক্রোফোনে চিৎকার করে বলছে, তারা মরতে চায়, তাদের নিষ্পাপ হৃদয়ে যুদ্ধের ক্লান্তি বয়। গাজায় ইতিহাস লিপিবদ্ধ করছে, এই ক্ষুদ্র-এতিম শিশুদের চুলও অবর্ণনীয় যন্ত্রণা এবং ভয়ের কারণে ধূসর হয়ে গেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, শিশুদের নীরব হাসি কেবল ইউক্রেইনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না। যখন বিশ্ব একটি সম্মিলিত জাগরণ অনুভব করছে এবং ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী ইচ্ছাশক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে, তখন আমি বিশ্বাস করি যে, গাজার পক্ষ থেকে আপনার আহ্বান ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি একটি ঐতিহাসিক দায়িত্বও পূরণ করবে।
তুর্কি ফার্স্ট লেডি ফিলিস্তিনের পরিস্থিতিকে কেবল গণহত্যা হিসেবেই বর্ণনা করেননি, বরং এটিকে স্বেচ্ছাচারী আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বহিঃপ্রকাশ বলেও বর্ণনা করেন – যেখানে ক্ষমতা ও আয়েশের তাড়নায় কিছু জীবনকে অন্যদের চেয়ে বেশি মূল্যবান বলে মনে করা হয়।
এই অন্যায্য আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংহতির আহ্বান জানিয়ে তিনি চিঠিতে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই বিকৃত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর এবং শক্তি একত্রিত করতে হবে, যা কিছু শিশুর জীবনকে অন্যদের তুলনায় কম মূল্যবান বলে মনে করে। আন্তর্জাতিক আইন এবং শেয়ার করা মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা ও আমাদের সাধারণ নীতিগুলোর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন মা, একজন নারী এবং একজন মানুষ হিসেবে, আমি আপনার চিঠিতে প্রকাশিত অনুভূতির সঙ্গে গভীরভাবে একমত। আমি আশা করি আপনি গাজার শিশুদের জন্য একই আশা লালন করবেন, যারা শান্তি ও প্রশান্তি কামনা করে।’
এমিন জোর দিয়ে বলেন, গাজার ১৮ হাজার ৮৮৫ জন শিশু, যারা ইতিমধ্যেই হারিয়ে গেছে – যেমন ছয় বছর বয়সী হিন্দ রজব – যাকে ৩৩৫ বার গুলি করা হয়েছিল, অথবা তিন বছর বয়সী রিম – যার দাদু আনন্দে ভরা চোখে তাকে বিদায় জানিয়েছিলেন – ইতোমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু দশ লক্ষেরও বেশি শিশু যারা বেঁচে আছে, তাদের জন্য আমাদের এখনো সুযোগ আছে।




অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
প্রধান উপদেষ্টা : আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন
পরিচালক, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠাতা, আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাপ্তান হোসেন সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
Design and developed by Web Nest