রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাণী, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আব্দুল জব্বারের জন্মবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২২

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাণী, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আব্দুল জব্বারের জন্মবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, সাবেক সংসদ-সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল জব্বারের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। তাঁর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাণী দিয়েছেন।

 

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে জানান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য আব্দুল জব্বার ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে বঙ্গবন্ধু স্নেহ করতেন ও ভালবাসতেন। তিনি নিজেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। প্রচন্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সাহসী, তেজদীপ্ত একজন মানুষ ছিলেন আব্দুল জব্বার।

 

৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬-দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অন্যন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন ছিলেন সাহসী, তেজদীপ্ত, ৭৫ পরবর্তী দুঃসময়েও তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছিলেন।

 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ নানা টানাপোড়ন মধ্যে দিয়ে গেছে। দলের ভাঙ্গা গড়া, ষড়যন্ত্র দেখা গেছে। আব্দুল জব্বার সেই ভাঙ্গা গড়া দলকে সুসংগঠিত করেছেন কখনো আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাননি, নেতৃত্বের প্রতি, দলের সঙ্গে বেইমানি, মোনাফেকি করেননি। ৭৫ পরবর্তী সময়ে তিনি নির্মমভাবে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। রাজনীতিতে সাহস, ত্যাগ ও দুর্যোগের সময় ঘুরে দাঁড়ানোর যে বৈশিষ্ট্য তা তার কাজের মধ্যে বার বার পরিলক্ষিত হয়েছে।

 

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাঁর যে অকৃত্রিম ভালবাসা, শ্রদ্ধা, আনুগত্য ও বিশ্বাস সেটা বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও সংকটে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক অতীত ছিল সমুজ্জ্বল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আব্দুল জব্বারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। আজীবন নির্মল নিবেদিত প্রাণ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী, নন্দিত জননেতা আব্দুল জব্বার একজন শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী ও ক্রীড়া সংগঠক। তিনি নিজ এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা স্থাপন ও পৃষ্টপোষকতা করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

 

আব্দুল জব্বার একাধারে যেমন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সংগঠক ছিলেন তেমনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি একজন ব্যতিক্রম ধর্মী রাজনীতিবিদ ও এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। মাটি ও অবহেলিত মানুষের সাথে ছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল বর্ণাঢ্যময় ও অহংকার করার মতো। আব্দুল জব্বারের অসাধারন ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা ও দূরদর্শিতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

 

উল্লেখ্য, আব্দুল জব্বার ১৯৪৫ সালের ১৭ নভেম্বর তৎকালীন সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহকুমার আলালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ও অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আব্দুল জব্বার ১৯৭৫ সালের ১৭ আগস্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেন। এজন্য তাকে কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। আব্দুল জব্বার বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ২০২০ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন