ছাতকে পুলিশ এসল্ট মামলায় আসামী দেড় হাজার : গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শুন্য গ্রাম

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২২

ছাতকে পুলিশ এসল্ট মামলায় আসামী দেড় হাজার : গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শুন্য গ্রাম

সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ছাতকে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গসহ পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে ৫ অক্টোবর ১৮জনের নাম উল্লেখসহ ১ হাজার ৫শ’ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা (নং-৬) দায়ের করেন।

 

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজারে দুই পাড়ার সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার থানার উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতানামা দেড় হাজার আসামী করে ওই মামলা দায়ের করেন।

 

তবে এ মামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেপ্তার করা যায়নি।

 

ছাতক থানায় দায়েরি পুলিশ এসল্ট মামলার আসামীরা হলেন, উপজেলার জাউয়া কোনাপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে কলেজ ছাত্রলীগ জুনেদ, জাউয়া পূর্বহাটি গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের ছেলে কলেজ ছাত্রলীগ মাহতাব, কোনাপাড়া গ্রামের সানাউল্লার ছেলে মিজান, একই পাড়ার মৃত আবদুল মালেকের ছেলে জসিম, শাহ আলমের ছেলে সুমন, পূর্বহাটির মনির মিয়ার ছেলে আলমগীর, কোনাপাড়ার ছবুর মিয়ার ছেলে নাজিম, পূর্বহাটি ও কোনাপাড়ার মৃত তাহের আলীর ছেলে জুনেদ, ইব্রাহিম আলী, হাসান আহমদ, গোলাম মোক্তাদির, ফয়েজ আহমদ, হেলাল আহমদ, রুবেল আহমদ, সাব্বির, আখতার হোসেন ও মঈন উদ্দিন। এছাড়া তাদেরকে সহযোগিতা করায় জাউয়া পূর্বহাটি ও কোনাপাড়ার ১৫০০ লোককে ওই এসল্ট মামলায় আসামী করা হয়েছে। পুলিশ এসল্ট মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতঙ্কে দুই পাড়ায় পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে।

 

এ ব্যাপারে মামলার বাদী, ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনার সময় থানার ওসিসহ আমরা দোলারবাজার ইউনিয়নের কুর্শি গ্রামে মার্ডার হয়েছে এই খবর পেয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথে জাউয়াবাজারে সংঘর্ষে হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি কিন্তু তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।

 

সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৭৫ রাউন্ড শর্টগান কার্তুজের ফাঁকা ফায়ার ও ২২ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজনরা পুলিশের উপর ইট-পাটকেল, কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করেছে। এতে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমানসহ ৭জন পুলিশ আহত হন।

 

প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে ছাতক উপজেলার জাউয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও জাউয়া কোনাপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর পুত্র জুনেদ আহমদের সাথে একই কলেজের ছাত্র ও জাউয়া পূর্বহাটি গ্রামের মমৃত আতাউর রহমানের ছেলে মাহতাব মিয়ার পূর্ব বিরোধ ছিল।

 

মঙ্গলবার বিকেলে জাউয়াবাজারের আকিল কমিউনিটি সেন্টারের সামনে তাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর দু’পক্ষই দুইদিকে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে দুই কলেজ ছাত্রের পক্ষ নিয়ে রাত ৮টায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জাউয়াবাজারের রাস্তার উপর দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিয়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় আড়াইঘন্টা ব্যাপী উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে পুরো জাউয়াবাজার এলাকাই রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। ওই সংঘর্ষে পুলিশ, পথচারীসহ উভয় পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছিল।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন

কম খরচে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন