প্রকাশিত: ৯:৪১ অপরাহ্ণ, মে ৭, ২০২৪
অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নের ঘোষণার মধ্য দিয়ে সারা দেশে আজ শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বচানের প্রথম ধাপের ভোট। ১৩৯ উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলাগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করার খবর পাওয়া গেছে।
দলীয় প্রতিক ছাড়া তিন ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে ‘মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের এমন নির্দেশনা পুরোপুরি মানা হচ্ছে না। প্রথম ধাপের ভোটে। মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা অধিকাংশই ভোটে অংশ নিচ্ছেন। স্বাভাবিক কারনেই ‘আলোচিত’ উপজেলার প্রথম ধাপের এই ভোট । উপজেলার প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে অর্থাৎ মোট ২৮জন প্রার্থী ইতিমধ্যে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ না করা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গতকাল ইসি ভবনে আয়েজিত ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ভোটে কে এলো না এলো এটা কমিশনের বিষয় নয়। কমিশনের কাজ হচ্ছে নির্বাচন আয়োজন করা।’ সিইসি বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোট যাতে প্রভাবমুক্ত হয় সেই প্রচেষ্টা চলমান।’
‘বিরোধী দলহীন উপজেলা নির্বাচন নিয়ম রক্ষার ভোট হচ্ছে কিনা’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন মোটেই নিয়ম রক্ষার ভোট না। নির্বাচন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন। কোনো একটা দেশের শাসনব্যবস্থাকে চালু রাখতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন।’
আল্টিমেটাম, বিবৃতি, মন্তব্য, সাংগঠনিক বার্তা, টেলিফোনে অনুরোধ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে তলব পর্যন্ত করা হয়েছে অনেক প্রার্থী ও তাদের নেতৃত্বাদাতাদের। তারপরও উপজেলা নির্বাচন থেকে সরানো যায়নি মন্ত্রী ও এমপি’র স্বজনদের। বলা যায় সাংগঠনিক নির্দেশনা সরাসরি উপেক্ষা করেছেন তারা। তাছাড়া, কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই কাউকে বিজয়ী না করার সিদ্ধান্তও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। আজ অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রথম ধাপে মন্ত্রী ও এমপিদের প্রায় ১৬ জন নিকটাত্মীয় বা পরিবারের সদস্য উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপেও অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন অনেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যর স্বজনরা।
প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে কঠোর অবস্থানের জানান দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইতিমধ্যেই এই নির্বাচনে পেশি-শক্তির ব্যবহার, সংঘর্ষ, কেন্দ্রে উশৃঙ্খলা, ব্যালোট বাক্স ছিনতাই কেউ করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহন করেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেছে। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা পর্যায়ে একাধিকবার বৈঠকও করেছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের নেতাদের দাবির মুখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। মূল লক্ষ্য ছিল সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনটি প্রভাবমুক্ত রাখা। কিন্তু ভোট শুরুর পর দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা নিজের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোটে দাঁড় করিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এটা পছন্দ করছেন না দলের প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি কঠোরভাবে প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তবে দল এ ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে। আর দলের এই সরে আসার অঘোষিত সিদ্ধান্তে তৃণমূলে বিরাজ করেছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা গত সপ্তাহে ধানমন্ডি অফিসে বসেছিলাম। তখন দলের সাধারণ সম্পাদক নেত্রীর নির্দেশটি আমাদের অবগত করেন এবং নেত্রীর নিদের্শ বাস্তবায়ন করতে দ্রুত তাগিদ দেন। আমরা নেত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।’
গত ২৮ এপ্রিল ইসি রাশেদা সুলতানা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক সম্মেলনকক্ষে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেন। গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ প্রধান অভিযোগ করেন, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছেন। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পুরোনো ভবনের তিনটি কক্ষ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে দখল করে ব্যক্তিগত কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। এমন অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : মো. রেজাউল ওয়াদুদ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ (বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এনফোর্সমেন্ট কাউন্সিল)
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আবু বক্কর তালুকদার
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নূরুদ্দীন রাসেল
অফিস : ৩৭০/৩,কলেজ রোড,আমতলা, আশকোনা,ঢাকা-১২৩০,
Call : 01911120520
Email : info.sylhet24express@gmail.com
Design and developed by Web Nest